মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ)

Marvel Cinematic Universe (MCU)

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ) ওইসব চরিত্র বা ক্যারেক্টরের গল্প যেগুলো মার্ভেল কমিক বইগুলিতে প্রদর্শিত চরিত্রগুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। তবে এম সি ইউ তে মার্ভেল কমিকের সব চরিত্র বা ক্যারেক্টর নেই। এক্স ম্যান এবং ফ্যান্টাস্টিক ফোর এর মতো সুপার হিরো মুভি কিছু বৈশিষ্ট্যের কারনে এখন পর্যন্ত এম সি ইউ তে ছিল না। তবে ডিজনি এবং ফক্স তাদের মধ্যে একটি চুক্তি হয়েছে। তাই ভবিষ্যতের মুভিগুলতে আমরা ওইসব চরিত্র দেখতে পারব। মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্সে শুধু যে মুভি আছে তেমনটা না। এতে কিছু টিভি সিরিয়াল ও কিছু কমিক বই আছে। আর এই সবই একটি অপরটির সাথে যুক্ত।

এম সি ইউ তে এখন পর্যন্ত ১৮টি মুভি প্রকাশিত হয়েছে। এম সি ইউ এর মুভি গুলো আলাদা আলাদা গ্রুপে বিভক্ত করা, যাদের ফেজ বা পর্যায় বলা হয়। এখন পর্যন্ত এম সি ইউ তে মোট ৩টি ফেজ আছে। ফেজ-০১ এ আয়রন ম্যান, দ্যা ইনক্রেডিবল হাল্ক, আয়রন মান-২, থর, ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ (দ্যা ফার্স্ট এভেন্জার), দ্যা এভেন্জার্স এই ৬টি মুভি রয়েছে। ফেজ-০১ এ আমরা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বা ক্যারেক্টর দেখতে পাই। ফেজ-০২ তে সেই চরিত্র বা ক্যারেক্টরের গল্প সহ আরও কিছু চরিত্র বা ক্যারেক্টর যুক্ত হয়।

ফেজ-০১

Iorn Man

এম সি ইউ এর প্রথম মুভিটি হলো ২০০৮ সালে প্রকাশিত হওয়া আয়রন ম্যান মুভি। এই মুভিটি একজন জিনিয়াস ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ী টনি স্টার্কের। যার কোম্পানি বিপৎজনক হাতিয়ার তৈরি করে। একদিন হঠাৎ সন্ত্রাসীরা তাকে কিডন্যাপ করে একটি মিসাইল বানাতে বলে। টনি তাদের হাত থেকে বাচার জন্য একটি শক্তিশালী সুট তৈরী করে এবং সেখান থেকে পালিয়ে আসে। তারপরে টনি অস্ত্র তৈরী করা বন্ধ করে তার আয়রন ম্যান সুট দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে থাকে।

The Incredible Hulk

এম সি ইউ এর দ্বিতীয় মুভিটি হলো দ্যা ইনক্রেডিবল হাল্ক। এটি ২০০৮ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভির গল্প একজন বিজ্ঞানীকে নিয়ে যার নাম হলো ব্রুস ব্যানার। একটি এক্সপেরিমেন্ট ফ্যাল হওয়ায় ব্রুস ব্যানার হাল্ক এ পরিণত হয়।

Iron Man 2

তৃতীয় মুভিটি হলো আয়রন মান ২। এই মুভিটি ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়। যখন সবাই জেনে যায় যে টনি স্টার্ক আয়রন ম্যান তখন টনিকে অনেক বিপদের সম্মুখীন হতে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার তার আয়রন ম্যান সুট নেওয়ার জন্য তার পিছনে লেগে যায়। একজন বিজ্ঞানী টনির থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য টনির শত্রু হয়ে যায়।

Thor

চতুর্থ মুভিটি হলো থর। মুভিটি ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভিটির গল্প অন্য একটি গ্রহ আসগার্ড এর। আসগার্ডের রাজা ওডিন নিজের ছেলে থরকে তার ভুলের শাস্তি দেওয়ার জন্য থরের সমস্ত শক্তি কেরে নিয়ে থরকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেয়। আর থরের সৎ ভাই লকি থরকে মেরে আসগার্ডের রাজা হতে চেয়েছিল। পরে থর তার শক্তি ফিরে পায় এবং লকিকে হারিয়ে দেয়।

Captain America

পঞ্চম মুভিটি হলো ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ ( দ্যা ফার্স্ট এভেন্জার )। এই ২০১১ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভির গল্পটি হলো ১৯৪২ সালের অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়কার। স্টিভ রজার্স নামের একজন দুর্বল এবং অসুস্থ ছেলে কোনোভাবে আর্মিতে ভর্তি হয়। ছেলেটি সুপার সোলজার এক্সপেরিমেন্টে যুক্ত হয়। যেখানে সে ক্যাপ্টেন আমেরিকাতে পরিণত হয়। ক্যাপ্টেন আমেরিকা তার বন্ধুদের সাথে মিলে হাইড্রা ( নাজি অর্গানাইজেশন ) এর বিরুদ্ধে লড়াই করে। লড়াইয়ের সময় তার বিমান ক্র্যাশ করে। তারপরে প্রায় ৭০ বছর পরে ক্যাপ্টেন আমেরিকার বিমান খুজে পাওয়া যায় আর তখন জানা যায় সে এখনো বেচে আছে।

The Avengers

ষষ্ঠ মুভিটি হলো দ্যা এভেন্জার্স। ২০১২ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে থরের সৎ ভাই লকি টেসারেক্ট কিউবটিকে নিয়ে পুরো পৃথিবীতে রাজত্ব করতে চেয়েছিল। লকিকে আটকানোর জন্য শিল্ড নামে একটি সংগঠন সব হিরোদের একসাথে এনে একটি দল গঠন করে। সেই দলের নাম দ্যা এভেন্জার্স রাখা হয়। লকি তাদের কাছে হেরে যায়।

ফেজ-০২

Iron Man 3

ফেজ-০২ এর প্রথম মুভিটি হলো আয়রন ম্যান ৩। ২০১৩ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে আয়রন ম্যান তার কিছু পুরাতন শত্রুর সাথে লড়াই করে। দ্বিতীয় মুভিটি হলো থরঃ (দ্যা ডার্ক ওয়ার্ল্ড) । মুভিটি ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে অন্ধকার জগতের শয়তান একটি শক্তিশালী জিনিস ইথার এর মাধ্যমে পুরো ইউনিভার্সকে অন্ধকার জগতের মতো করতে চেয়েছিল। থর লকির সাথে মিলে সেই শয়তানকে পরাজিত করে।

Captain America: The Winter Soldier

তৃতীয় মুভিটি হলো ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ ( দ্যা উইন্টার সোলজার ) । ২০১৪ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে ক্যাপ্টেন আমেরিকা জানতে পারে সেই হাইড্রা এখনো আছে যেটা সে অনেক আগেই শেষ করে দিয়েছিল। মুভিটিতে ক্যাপ্টেন আমেরিকার পুরাতন বন্ধু তার শত্রু হয়ে তার সামনে আসে।

চতুর্থ মুভিটি হলো গার্ডিয়ান্স অফ দ্যা গ্যালাক্সি। মুভিটি ২০১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে আমরা ৫ জন অদ্ভুত প্রাণী দেখতে পাই। তারা একটা এলিয়েনের থেকে তাদের গ্যালাক্সিকে রক্ষা করে। এই মুভিতে আমরা জানতে পারি এখন পর্যন্ত দেখানো কিছু বিশেষ বস্তু আসলে ইউনিভার্সের সবথেকে শক্তিশালী বস্তু জাকে ইনফিনিটি স্টোন বলে। আর থানোস নামের এক শয়তান ইনফিনিটি স্টোন গুলোকে নিতে চায়।

avengers age of Ultron

পঞ্চম মুভিটি হলো এভেন্জার্সঃ ( এইজ অফ আলট্রন ) । ২০১৫ সালে এই মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে টনি স্টার্ক আলট্রন নামের একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরি করে যেটা মানুষকে বিপজ্জনক মনে করে তাদের হত্যা করতে চায়। সব এভেন্জার্স একসাথে হয়ে আলট্রন ও তার রোবট গুলোকে শেষ করে দেয়।

ant man

ষষ্ঠ মুভিটি হলো আন্ট-ম্যান। ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয় এই মুভিটি। এই মুভিতে একজন মাস্টার চোর স্কট ল্যাং ডাক্তার হ্যাং পিম নামের একজন বিজ্ঞানীকে সাহায্য করে। হ্যাংক পিমের টেকনোলজি অর্থাৎ আন্ট-ম্যান সুটটি খারাপ লকেদের হাত থেকে বাচাতে স্কট ল্যাং তাকে সাহায্য করে।

এম সি ইউ এর সব মুভির শেষে মিড এবং পোস্ট ক্রেডিট সিন থাকে। অর্থাৎ এই সিনে পরবর্তী মুভির সম্পর্কে একটু ধারণা পাওয়া যায়।

ফেজ-০৩

captain america civil war

ফেজ-০৩ এর প্রথম মুভিটি হলো ক্যাপ্টেন আমেরিকাঃ সিভিল ওয়ার। ২০১৬ সালে এটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে ইউ এস এ সরকার সুপার হিরোদের নিজের কনট্রোলে রাখার জন্য একটি চুক্তি করে। তখন সব এভেন্জার্স দুইটি দলে ভাগ হয়ে যায়। যারা ইউ এস এ এর ওই চুক্তিতে রাজি ছিল তারা আয়রন ম্যান এর দলে ছিল। আর যারা চুক্তিতে রাজি ছিল না তারা ক্যাপ্টেন আমেরিকার দলে ছিল। এই মুভিতে দুইটি নতুন ক্যারেক্টার এর প্রকাশ পায়। স্পাইডার-ম্যান এবং ব্ল্যাক প্যান্থার।

doctor strange

দ্বিতীয় মুভিটি হলো ডাক্তার স্ট্রেঞ্জ। মুভিটি ২০১৬ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভিটির গল্প একজন বিখ্যাত নিউরোসার্জণ ডাক্তার স্টিফেন স্ট্রেঞ্জের। একটি গাড়ী দুর্ঘটনার পরে সে তার নিজের হাতের চিকিৎসা করতে না পেরে এমন এক জায়গায় যায় যেখানে গিয়ে তার হাত ঠিক হয়। কিন্তু সে ওই জায়গা থেকে ফিরে না এসে ওইখানে থেকে যায় দুনিয়া বাচানোর জন্য এবং সে একজন বড় জাদুগর হয়ে যায়।

guardians of the galaxy 2

তৃতীয় মুভিটি হলো গার্ডিয়ান্স অফ দ্যা গ্যালাক্সি ২। মুভিটি ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভির প্রধান ক্যারেক্টার অর্থাৎ পিটার কুইল তার বাবার সম্পর্কে সব কিছু জানতে পারে। যেহেতু তারা গার্ডিয়ান্স নামে বিখ্যাত ছিল তাই তারা আবার শত্রুদের থেকে গ্যালাক্সিকে বাচায়।

spiderman homecoming

চতুর্থ মুভিটি হলো স্পাইডার-ম্যানঃ হোমকামিং। ২০১৭ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। ক্যাপ্টেন আমেরিকা সিভিল ওয়ার মুভিতে আমরা স্পাইডার-ম্যান ক্যারেক্টার দেখতে পাই। এই গল্গের হিরো হচ্ছে পিটার পার্কার। পিটার টনি স্টার্ককে ইম্প্রেস করার জন্য সে নিজেকে একজন ভালো হিরো হিসেবে প্রমান করতে চায়। কিন্তু অনেক ভুল করার পরে পিটার তার দায়িত্ব বুঝতে পারে।

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ)

পঞ্চম মুভিটি হলো থরঃ রাগনারক। ২০১৭ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে থরের বাবা ওডেনের মৃত্যুর পরে হেলা গোড্ডেস অফ ডেথ এসে এসগার্ডকে নিজের দখলে করে নেয়। থর, লকি এবং হাল্ক হেলাকে আটকানোর চেষ্টা করে এবং তার জন্য তাদের এসগার্ড ছেরে চলে যেতে হয়।

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ)

ষষ্ঠ মুভিটি হলো ব্ল্যাক প্যান্থার। ২০১৮ সালে এই মুভিটি প্রকাশিত হয়। গল্পটি ওয়াকান্ডা দেশের রাজকুমার টি’চালাকে নিয়ে। ক্যাপ্টেন আমেরিকা সিভিল ওয়ার মুভিতে নিজের বাবার মৃত্যুর পরে ওয়াকান্ডা ফিরে যায়। ওয়াকান্ডা অনেক আধুনিকতম একটি দেশ। কারন এইখানে পৃথিবীর সবথেকে শক্তিশালী ধাতু ভাইব্রেনিয়াম পাওয়া যায়।

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ)

সপ্তম মুভিটি হলো এভেন্জার্সঃ ইনফিনিটি ওয়ার। এই মুভিটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। মারভেল স্টুডিওস এর প্রায় ১০ বছরের পরিশ্রম হলো এই মুভিটি। এই মুভিতে এম সি ইউ এর প্রায় সব হিরো থানোস এর সাথে লড়াই করে। থানোস সব ইনফিনিটি স্টোন জমা করে ইউনিভার্সের প্রায় অর্ধেক জনবসতি শেষ করে দেয়।

ant man and the wasp

অষ্টম মুভিটি হলো আন্ট-ম্যান এন্ড দ্যা ওয়াস্প। এই মুভিটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। এই মুভিতে আন্ট ম্যান অর্থাৎ স্কট ল্যাং ডাক্তার হ্যাং পিমের মেয়ের সাথে একটি নতুন মিশনে থাকে।

captain marvel

নবম মুভিটি হলো ক্যাপ্টেন মার্ভেল। ২০১৯ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এই মুভির গল্পটি হলো সবথেকে শক্তিশালী ফিমেল সুপার হিরো ক্যারল ডেনভার্সের। এই মুভির ঘটনা ১৯৯০ এর দিকের। ক্যারল ডেনভার্সের টেসারেক্ট কিউব এর থেকে শক্তি পেয়েছিলো।

avengers endgame

দশম মুভিটি হলো এভেন্জার্সঃ এন্ডগেম। ২০১৯ সালে মুভিটি প্রকাশিত হয়। এম সি ইউ এর মধ্যে এভেন্জার্স এন্ডগেম সেরা একটি মুভি। এভেন্জার্স: ইনফিনিটি ওয়ার মুভিতে থানোস ইনফিনিটি স্টোন ব্যাবহার করে পুরো বিশ্বের অর্ধেক জনসমষ্টি শেষ করে দিয়েছিলো। তাদেরকে আবার ফিরিয়ে আনার জন্য এভেন্জার্স সুপার হিরো টাইম ট্রাভেল করে ইনফিনিটি স্টোন গুলো একত্রিত করে এবং সবাইকে আবার ফেরত নিয়ে আসে। এই মুভিতে এভেন্জার্স এর সকল সুপার হিরো থানোস এর সাথে লড়াই করে এবং শেষ পর্যন্ত থানোস এভেন্জার্সের কাছে হেরে যায়।

মার্ভেল সিনেম্যাটিক ইউনিভার্স (এম সি ইউ)

লোকি ২য় মৌসুম

লোকির প্রথম মৌসুম ২০২১ এর জুনে মুক্তি পায়। ২০২০ এর নভেম্বরেই দ্বিতীয় মৌসুমের নির্মাণ শুরু হয়। ২০২১ এর নাগাদ প্রথম মৌসুমের প্রধান চিত্রনাট্যকার মাইকেল ওয়ালড্রনের পুনরায় “কিছু মাত্রায়” যুক্ত থাকার সম্ভাবনা প্রকাশ করা হয়। ২০২১ এর জুলাইতে আনুষ্ঠানিকভাবে ধারাবাহিকটি ঘোষণা করা হয়এবং লোকি চরিত্রে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা হয়। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারিতে চিত্রনাট্যকার হিসেবে এরিক মার্টিন এবং নির্বাহী প্রযোজক হিসেবে ওয়ালড্রনের নাম ঘোষিত হয়। ২০২২ এর জুনে জাস্টিন বেনসন এবং আরন মুরহেডের পরিচালনায় যুক্তরাষ্ট্রের পাইনউড স্টুডিওতে চিত্রগ্রহণ শুরু হয়। লোকির দ্বিতীয় মৌসুম ২০২৩ এর মাঝামাঝি সময়ে মুক্তির জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এবং এতে মোট ৬টি পর্ব থাকবে।

Leave a Comment